আইইউবিএটিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, নিন্দা ছাত্র ফ্রন্টের 

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ৩য় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে হামলার প্রতিবাদে আজ তারা ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে। 

এর আগে শনিবার পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলনের নামেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ক্যাম্পাস শাটডাউন কর্মসূচি পালনের সময় বহিরাগত দিয়ে তাদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রবিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের ক্লাসরুম ফাঁকা দেখা গেছে। কোনও শিক্ষার্থীকে ক্লাসে দেখা যায়নি। মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এ সময় বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন তারা। 

এদিকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস শাটডাউন কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। ২ মার্চ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সংগঠনটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নাবিন আবতাহি ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান এক যুক্ত বিবৃতিতে আইইউবিএটিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ ও শাটডাউন কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বহিরাগতদের দিয়ে আন্দোলনে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

এর আগে গতকাল (১ মার্চ) সংগঠনের প্রচার সম্পাদক ফাইয়াজ চৌধুরী স্বাক্ষরিত পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিরাগতদের দিয়ে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে আন্দোলন করছে, কিন্তু বার বার আইইউবিএটি কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং কিভাবে পেছানো যায় সে প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে। সর্বশেষ বহিরাগত দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে লড়াকু ভূমিকা পালন করেছে। এর পেছনের কারণ হিসেবে বলা যায়– আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ছিলো। পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা শোষণ-নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও মত প্রকাশের অধিকার হরণসহ বিভিন্ন সংকটও এর পেছনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তির আকাঙ্ক্ষায়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ভেবেছিলেন, আন্দোলন পরবর্তী সময়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হবে, সংকট-সমস্যা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগী হবেন। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ পরিস্থিতিতে, অবিলম্বে আইইউবিএটি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে, তাদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান করছি। 

পাঠকের মন্তব্য