জিডিইউতে জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে পদযাত্রা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
-
- - নিউজ -
- ডেস্ক --
- ১৭ জুলাই, ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহিদ আবু সাঈদসহ সকল শহিদদের স্মরণের মাধ্যমে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে জুলাই শহিদ দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে পদযাত্রা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) ২০২৫ সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ পর্যন্ত গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন থেকে একটি পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যের নেতৃত্বে পদযাত্রাটি একাডেমিক ভবন থেকে শুরু হয়ে কালিয়াকৈর উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একাডেমিক ভবনে এসে শেষ হয়। এই পদযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশ্রগহণ করেন।
সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে শুরু হয় “জুলাই শহিদ দিবস” উপলক্ষ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনে আহতদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াকৈর উপজেলার শহিদ আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তাঁর দুই বোন ও ভগ্নিপতি। আজকের আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ।
কালিয়াকৈর উপজেলার শহিদ আবদুল্লাহ আল মামুনের বড় বোন তার বক্তব্যে, শহিদ আবদুল্লাহ আল মামুনের গণঅভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত হওয়া ও ৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে, তার ভাইয়ের নির্মমভাবে শহিদ হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত সকলে ঘটনার গভীরতা ও নির্মমতা উপলব্ধি করে বিমর্ষ হয়ে উঠেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য বলেন, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এভাবে জীবন বিলিয়ে দেয়ার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আর নেই।
তিনি বলেন, আবু সাইদ শহিদ হওয়ার পর কোটা আন্দোলন মূলত গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। আর সেই মহুর্তেই বাংলাদেশ কোন দিকে পরিচালিত হবে সেটা নির্ধারণ হয়ে যায়। পরবর্তী ধরারবাহিকতায় ০৫ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের চোখের সামনে অনেকগুলো তাজা প্রাণ চলে গেছে। একটা প্রাণ যায় আরেকটা প্রাণ বুলেটের সামনে বুক পেতে দেয়। এমন অদম্য সাহস দেশের জন্য ভালোবাসা, নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে যাওয়া এটাও বিশ্বে আর নেই।
মাননীয় উপাচার্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আবু সাইদসহ সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। এছাড়া, মাননীয় উপাচার্য জুলাই শহিদদের পাশে থাকার জন্য সবাইকে আহবান জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই এলাকার শহিদ পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ইতিহাসকে থামিয়ে রাখা যায় না। যুগে যুগে যারা নিজের স্বার্থকে চরিতার্থ ও ইচ্ছাকে বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্নভাবে ইতিহাসকে আড়ালে আবডালে রেখে তার স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছে, সেই সব শাসকদের কেউ টিকে থাকতে পারে নি। জনতার যে রুদ্ররোষ সেটা কোন একসময়ে তাকে আঘাত করবে এবং তার পতন হবেই।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান খান। আরও বক্তব্য দেন এডুকেশনাল টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক সৈয়দা জাকিয়া নাঈম, সাধারণ শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মোঃ ছানাউল্লাহ, ইন্টারনেট অব থিংস অ্যান্ড রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মোঃ আশিকুচ্ছালেহীন, সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মাসুদ রানা, সহকারী নেটওয়ার্ক ও হার্ডওয়্যার প্রকৌশলী বিমলেশ সাহা এবং ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাফি ও তানজীম আলম তাসীন।
অনুষ্ঠানে কালিয়াকৈর উপজেলার শহিদ আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সবশেষে, শহিদ আবু সাঈদসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।