দীর্ঘমেয়াদী রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত: আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর ৬৩% ঘটে দীর্ঘমেয়াদী রোগের কারণে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, স্ট্রোকসহ নানান জটিলতা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে, যার প্রধান কারণ হলো ভুল খাদ্যাভ্যাস ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টার (এডব্লিউসি)

  • ড. মজিবুল হক — ফাংশনাল ও ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

এডব্লিউসি’র প্রতিষ্ঠাতা ড. মজিবুল হক একজন স্বনামধন্য ফাংশনাল, ন্যাচারোপ্যাথি ও ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনে মেডিসিনাল কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব রিজেনারেটিভ মেডিসিনে কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করছেন।

অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি মানুষের মাঝে প্রচার করতে থাকেন “রোগের মূল কারণ হলো ভুল খাবার ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। সঠিক খাবার ও স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলই পারে রোগকে স্থায়ীভাবে প্রতিরোধ করতে।“ তাঁর এই বার্তা বিপুল জনপ্রিয়তা পায় এবং অসংখ্য মানুষ কেবল তাঁর পরামর্শ মেনে চলেই রোগ থেকে মুক্তি পেতে শুরু করেন। ক্রমশ জনসাধারণের চাহিদা এত বেড়ে যায় যে, তিনি পূর্ণসময় চিকিৎসা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন ও বাংলাদেশে আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। মানবতার কল্যাণে তিনি বিশ্বব্যাপী ভিডিও, সেমিনার, চিকিৎসক প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতামূলক বক্তব্যের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর উদ্যোগে যারা একসময় জীবন নিয়ে প্রায় আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন এমন অসংখ্য মানুষ নতুন করে বেঁচে থাকার আশা খুঁজে পাচ্ছেন।

  • মূল দর্শন

একজন ফাংশনাল ও ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ড. হক বিশ্বাস করেন দীর্ঘমেয়াদী রোগের স্থায়ী সমাধান হলো রোগের মূল কারণ নিরাময়। অধিকাংশ রোগই শুরু হয় পাকস্থলী থেকে, কারণ ভুল খাবার, প্রোসেসড ফুড, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ শরীরকে দুর্বল করে দেয়। তাই এখানে চিকিৎসা শুরু হয় রোগীর খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে। সঠিক খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক প্রশান্তি ও ঘুমের সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে রোগ সৃষ্টির মূল কারণ বন্ধ হয়ে যায় এবং রোগী ধীরে ধীরে স্থায়ীভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

  • চিকিৎসা পদ্ধতি

এডব্লিউসি কোনো রোগের শুধু লক্ষণ দমন করে না, বরং রোগীর সম্পূর্ণ ইতিহাস বিশ্লেষণ করে ব্যক্তিভিত্তিক চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করে। প্রয়োজনে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী আধুনিক রিজেনারেটিভ থেরাপি ব্যবহার করা হয়, যেমন ওজোন থেরাপি, হাইপারবারিক অক্সিজেন থেরাপি, আকুপাংচার, ফিজিওথেরাপি, কাইরোপ্র্যাকটিক ইত্যাদি। এসবই সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রদান করা হয়।

  • স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রোগ্রাম

যখন রোগীরা সুস্থ হতে শুরু করেন, তখন তাদের হেলথ ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম-এর আওতায় আনা হয়। এটি একটি কাঠামোবদ্ধ পার্সোনালাইজড সিস্টেম, যা নিশ্চিত করে সুস্থতা দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকে এবং পুনরায় ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হতে না হয়।

  • সচেতনতা কার্যক্রম ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে অবস্থান

প্রতিসপ্তাহে আয়োজিত ফ্রি হেলথ সেমিনারে মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের শিক্ষা লাভ করেন। অনেকেই শুধু এই সেমিনার থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে সুস্থতার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু মহল ও ব্যক্তি এডব্লিউসি ও ড. মজিবুল হকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং দেশ-বিদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তাই রোগীদের প্রতি আহ্বান গুজবে কান না দিয়ে প্রমাণিত বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার ওপর আস্থা রাখুন।

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৩% মানুষ লাইফস্টাইল ডিজিজে ভুগছে। এ অবস্থায় ড. মজিবুল হকের জনপ্রিয়তা ও অনুসারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসা প্রতিদিন আরও বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে। তাঁর স্বপ্ন হলো সমস্ত মানুষ যেন স্বাস্থ্য সচেতন হয়, প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখে সঠিক খাবার ও জীবনযাপন অনুসরণ করে, এবং ওষুধের ওপর নির্ভর না করে একটি সুস্থ, দীর্ঘ ও সুখী জীবন যাপন করতে পারে।

পাঠকের মন্তব্য