প্রতারণার মামলায় জামিন পেলেন গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান
-
- - নিজস্ব -
- প্রতিবেদক --
- ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
‘প্রতারণা ও চুরির’ অভিযোগে সাবেক এক কর্মীর দায়ের করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমানসহ তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
গতকাল রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম রৌনক জাহান তাকির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তারা। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন পাওয়া অপর দুই কর্মকর্তা হলেনÑগ্রামীণফোনের ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফজলুল হক এবং চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার সায়েদা তাহিয়া হোসেন।
মামলাটি দায়ের করেন গ্রামীণফোনের সাবেক কর্মী রাকিবুল আজম। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি প্রতারণা ও চুরির অভিযোগে এই মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের ২৬ অক্টোবর হাজির হতে সমন জারি করেছিলেন। নির্ধারিত তারিখে তিন কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন আবেদন জানান।
শুনানির সময় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, ‘রাকিবুল আজম গ্রামীণফোনের সাবেক কর্মী। তর্কিত চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই বিষয়ে শ্রম আদালতে একটি মামলা চলমান আছে, যার কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। এ মামলায় প্রতারণা বা চুরির কোনো উপাদান নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিরা দেশের প্রথিতযশা করপোরেট ব্যক্তিত্ব, তারা আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে।’
অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকেয়া আক্তার রোকসানা জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘বাদীর পাওনা আট লাখ টাকারও বেশি। পাওনার টাকা নিতে গেলে আসামিরা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ফেরত পাঠায় এবং পরে টালবাহানা শুরু করে।’
বাদী রাকিবুল আজম আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ‘শ্রম আদালতের মামলার সঙ্গে এ মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। শ্রম আদালতে তারা হেরে গিয়ে হাইকোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়েছে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাকিবুল আজম ২০০৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনে চাকরি করেন। চাকরিরত অবস্থায় ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আউটসোর্সিং প্রকল্পের অধীনে কর্মীদের মধ্যে নির্দিষ্ট অর্থ বণ্টনের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ সময় কোম্পানির কাছে তার ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৮ টাকা পাওনা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর তাকে সেই টাকা পরিশোধের জন্য ডাকা হলেও পরে বিভিন্ন অজুহাতে তা প্রদান করা হয়নি।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক মামলা। আমাদের সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে হয়রানি করার জন্যই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি আস্থাশীল এবং বিশ্বাস করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব।’
আইনি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, তারা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।