২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে আইপিডিসি’র মুনাফা বেড়েছে ৭৪%

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (এনবিএফআই) আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি. ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে নয় মাসে ২৬২ মিলিয়ন টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৩.৮% বেশি। চ্যালেঞ্জিং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও শক্তিশালী বিনিয়োগ আয়, কৌশলগত ব্যয় ব্যবস্থাপনা এবং স্থিতিশীল ঋণ প্রদানের কৌশলের ফলে এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এসেছে।

তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৬৪ টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ০.৩৭ টাকা। এই সময়ে মোট সুদ আয় (গ্রস ইন্টারেস্ট ইনকাম) ১৩.৩% বৃদ্ধি পেয়ে ৭,১১৫ মিলিয়ন টাকা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির স্থিতিশীল পোর্টফোলিও সম্প্রসারণ এবং সঠিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রতিফলন।

এই সময়ে আইপিডিসি এর বিনিয়োগ আয়েও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে,  যা গত বছরের তুলনায় ১৩১.২% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৬ মিলিয়ন টাকায়। ট্রেজারি সম্পদ থেকে বেশি মুনাফা এবং মূলধনবাজারের অনুকূল পরিস্থিতি এই আয় বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এই দৃঢ় বিনিয়োগ আয় আইপিডিসির সামগ্রিক মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে, ফলে মোট পরিচালন আয় ১৮.৯% বেড়ে হয়েছে ২,৫৪০ মিলিয়ন টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫) আগের প্রান্তিকের তুলনায় পরিচালন আয় আরও ১১.৩% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৯ মিলিয়ন টাকায়।

অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে আইপিডিসির পরিচালন ব্যয় বছরে মাত্র ৫.৯% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৭৯ মিলিয়ন টাকায়। এর ফলে পরিচালন মূনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে ৩৩.১% বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১,৩৬১ মিলিয়ন টাকায়। তৃতীয় প্রান্তিকে পরিচালন মূনাফা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ২১.১% বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫৪১ মিলিয়ন টাকা।

কর পরবর্তী নিট মুনাফা ৭৩.৮% বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৬২ মিলিয়ন টাকায়। শুধুমাত্র তৃতীয় প্রান্তিকে নিট মুনাফা ছিল ১১২ মিলিয়ন টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৬.১% বেশি।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইপিডিসির ঋণ, অগ্রিম ও লিজ পোর্টফোলিও ৫.২% বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩,১৩১ মিলিয়ন টাকায়, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় বেশি। একই সময়ে বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ১৩.০% বেড়ে হয়েছে ১০,৭৫৩ মিলিয়ন টাকা। গ্রাহক আমানতও ১৩.৭% বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮,৮৬৯ মিলিয়ন টাকায়, যা আমানতকারীদের অব্যাহত আস্থা ও ব্র্যান্ডের স্থিতিশীলতার প্রতিফলন।

কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ১৬.৮৯ টাকা থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ১৭.০৭ টাকায়। এদিকে শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) এর উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিয়েছে। এক বছর আগে যেখানে এটি ছিল মাইনাস ৭.৯৬ টাকা, সেখানে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৩৩ টাকায়। এটি কোম্পানির মূল কার্যক্রম থেকে শক্তিশালী নগদ প্রবাহ সৃষ্টির সক্ষমতাকে তুলে ধরে।

পাঠকের মন্তব্য