এইচএসসি পাসের পর কেন পড়বেন বিইউএফটিতে?

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সারা দেশে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৮.৯৫ শতাংশ কম। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক বেশি চিন্তা কাজ করে, কোথায় ভর্তি হবে? কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করবে? ক্যারিয়ার কিভাবে তৈরি করবে?। দেশের শ্রমবাজারের কথা ভাবলে টেক্সটাইল নিয়ে পড়াশোনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। 

সারা বিশ্বে পোশাকের প্রায় ১ দশমিক ৮৪ ট্রিলিয়ন ডলারের এক বিশাল বাজার আছে। আকারে এটি স্মার্টফোনের বাজারের তুলনায় প্রায় চার গুণ বড়। সারা বিশ্বেই এই খাতে দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েটরা যেন এই বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই সাজানো হয়েছে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ‍্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) কোর্সগুলো। 

বিইউএফটি একটি বিশেষায়িত ও স্থায়ী সনদপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উচ্চশিক্ষা বিস্তারে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। তৈরি পোশাকশিল্প আমাদের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত এবং আগামী ১০ বছর পর্যন্ত নিশ্চিন্তে তাই থাকবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কারণে সেগুলোতে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীর চাহিদা এখনকার চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে যাবে। ফলে কাজ দেখানোর সুযোগও বাড়বে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশেও নিজেদের ব্র্যান্ডের অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আনাগোনা আরও বাড়বে। 

এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষার উপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন ও নিয়মিতভাবে কারিকুলাম ও সিলেবাসের উন্নয়ন, যথোপযোগী এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক ল্যাব প্রতিষ্ঠা ও সেসবের মাধ্যমে প্রায়োগিক শিক্ষাদান, দেশের বিভিন্ন উৎপাদনমুখী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা, দেশি-বিদেশি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা ইত্যাদি বিইউএফটির শিক্ষা পদ্ধতির ক্রমান্নয়ে উন্নতকরণের সহায়ক শক্তি। বিইউএফটি এ পর্যন্ত ৩০টি দেশি ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে। বেশ কয়েকটি বিদেশি সরকার ও প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে বিভিন্ন যৌথ গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। 
বিইউএফটির অনেক গ্র্যাজুয়েট বর্তমানে পেশাগত জীবনে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে এবং তাদের উদাহরণ বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। 

দেশের পোশাকশিল্প খাতের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ আছে বলেই বিইউএফটির অনেক স্নাতক এরই মধ্যে নামী বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতে শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালমার্ট, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, এইচঅ্যান্ডএম, লি অ্যান্ড ফাং, জারাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তাদের অ‍্যালামনাইরা।

বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আইয়ুব নবী খান বলেন, সাতটি অনুষদের অধীনে বিইউএফটিতে ১৫টি প্রোগ্রাম। চালু আছে তিনটি সার্টিফিকেট ও একটি ডিপ্লোমা কোর্স। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্স ডিজাইনে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমরা যেমন দক্ষ পেশাজীবী তৈরি করছি, তেমনি শিল্প খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্যও শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিচ্ছি। ৫২টি ল্যাবের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের গার্মেন্টসসহ টেক্সটাইল খাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের একটা জায়গা করে নিয়েছেন।

শিল্প খাতের চাহিদা ও প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হয় বিইউএফটির পাঠ্যক্রম। এখানে পড়ানো হয় মার্চেন্ডাইজিং, ডিজাইন ও মার্কেটিং, লিন ম্যানুফ্যাকচারিং, প্রোডাকশন প্ল্যানিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা, গার্মেন্টস কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সিস্টেম, ফেব্রিক অপ্টিমাইজেশনসহ বিভিন্ন বিষয়।

পাঠকের মন্তব্য